৯২ বছরেও থামেনি সাইকেলের চাকা

নাটোরের সিংড়া উপজেলার ধুলাউড়ি গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেনের বয়স এখন ৯২ বছর ১০ মাস। উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, তাঁর জন্ম ১৯৩২ সালের ৫ জুলাই। বয়সের ভারে মেরুদণ্ড বাঁকা হলেও চলাফেরায় তিনি এখনো সক্রিয়।
আনোয়ার হোসেনের চার মেয়ে ও এক ছেলে। ছোট ছেলে লিটন হোসেন গ্রামে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান চালান, আর অন্যান্য সন্তানরা ঢাকায় পোশাক শিল্পে কাজ করেন। পরিবারের সদস্যদের মতে, আনোয়ার হোসেন কারো সহযোগিতা ছাড়াই নিজের সব কাজ নিজেই করেন। রান্নার ঝামেলা এড়াতে তিনি সাধারণত গুড়-মুড়ি খেয়ে দিন কাটান।
তাঁর অসাধারণ সাইকেল চালানোর দক্ষতা এলাকায় আলোচিত। জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় থাকা দুই মেয়ের বাড়িতে তিনি প্রায়ই সাইকেল চালিয়েই যান। এমনকি বগুড়ায় থাকা ভাইয়ের বাড়িতেও সাইকেলেই যাতায়াত করেন। মেয়ে লোপা বেগম জানান, বাবা ইচ্ছা করলে বাস বা ট্রেনে যেতে পারলেও সাইকেলই পছন্দ করেন।
আনোয়ার হোসেনের টিনের ঘরটি পরিপাটি, যেখানে সাইকেল মেরামতের যন্ত্রপাতি ও একটি পুরনো রেডিও সযত্নে রাখা আছে। করাচিতে জন্ম নেওয়া আনোয়ার পাকিস্তান আমলে নৌবাহিনীতে ট্রাক চালাতেন। পরে বাংলাদেশে চলে এসে বগুড়ায় বসবাস শুরু করেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর তিনি ধুলাউড়ি গ্রামে দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন এবং সেখানেই স্থায়ী হন। দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি বাস ও ট্রাক চালিয়েছেন।
বয়সের ভারে শরীর দুর্বল হলেও আনোয়ার হোসেনের প্রাণচাঞ্চল্য আজও প্রশংসনীয়। সাইকেল চালিয়ে দূরদূরান্তে যাতায়াত তাঁর জীবনযাপনেরই অংশ হয়ে উঠেছে।