শিরোপার স্বাদে মিষ্টিমুখ মোহামেডানে

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ইতিহাসে যেন নতুন অধ্যায়ের সূচনা। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর শিরোপা জয়ের মুহূর্তে ক্লাব প্রাঙ্গণ পরিণত হয় উৎসবের মাঠে। সমর্থকদের ঢল নামে, উপস্থিত হন প্রাক্তন খেলোয়াড়রাও। মোহামেডানের সাবেক তারকা জসিমউদ্দিন জোসী আনন্দভরে ক্লাব কর্মীদের হাতে টাকা গুঁজে দিয়ে বলেন, “তাড়াতাড়ি মিষ্টি আনো!”

মিষ্টি আসতে দেরি হয়নি। শুরু হয় মিষ্টি বিতরণের ধুম। হাসি-আনন্দে মুখরিত হয়ে ওঠে সাদা-কালো জার্সির এই ক্লাব। বহু বছরের তৃষ্ণা মেটানোর মতোই ছিল এই জয়।

মোহামেডানের হয়ে চারটি লিগ ও ছয়টি ফেডারেশন কাপ জয়ের সাক্ষী জোসী বলেন, “এবারই প্রথম পেশাদার লিগে চ্যাম্পিয়ন হলাম। এটি শুধু মোহামেডানের জয় নয়, বাংলাদেশের ফুটবলের জয়ও। এক সময় মোহামেডান শুধু চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই মাঠে নামত। তারপর দীর্ঘ সময় শিরোপাশূন্য থাকার পর এই জয়—এক কথায় অপার আনন্দ!”

sweet-mouthed-mohammedan-tastes-the-title

উৎসবে শরিক হন ক্লাবের প্রবীণ কর্মকর্তা ফজলুর রহমান বাবুল। দীর্ঘদিনের সঙ্গী তিনি মোহামেডানের। আবেগঘন কণ্ঠে বলেন, “বাংলাদেশের ফুটবলে এ এক যুগান্তকারী ঘটনা। মোহামেডান যখন হাসে, দেশের ফুটবলও হাসে।”

মোহামেডানের ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ নকীব, যিনি এক সময় এই ক্লাবের খেলোয়াড়ও ছিলেন, বলেন, “খেলোয়াড়দের নিষ্ঠা ও পরিশ্রমই এই সাফল্যের মূল। বিদেশি খেলোয়াড়দের অবদানও অসাধারণ। তবে চ্যালেঞ্জ কম ছিল না—আর্থিক সংকট, স্থায়ী মাঠের অভাব, নিয়মিত বেতন দেওয়ার অসুবিধা। তবু আমরা পরিবারের মতো একসাথে থেকেছি, এটাই আমাদের শক্তি।”

নকীব আরও যোগ করেন, “আমার স্বপ্ন ছিল পেশাদার লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। আজ তা পূরণ হয়েছে। তিন ম্যাচ বাকি থাকতেই শিরোপা নিশ্চিত করা—এটা সৃষ্টিকর্তার বিশেষ দান।”

এই জয় মোহামেডানকে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে খেলার সুযোগ এনে দিয়েছে। তবে নকীবের মতে, এএফসি কাপের শর্ত পূরণে ক্লাবের এখনও কিছু ঘাটতি আছে। তবে সদিচ্ছা থাকলে তা অসম্ভব নয়।

আজ মোহামেডানের সমর্থকরা শুধু মিষ্টির স্বাদই পায়নি, পেয়েছে ইতিহাসের স্বাদও। দীর্ঘদিন পর সাদা-কালো পতাকার নিচে আবারও বইছে বিজয়ের euphoria।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button