চীনা ব্যবসায়ীদের সফরে নতুন আশা দেখছেন বিডা চেয়ারম্যান

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেছেন, চীনা ব্যবসায়ীদের এই সফরে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন আশার সঞ্চার করেছে বিডা চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, “এত বড় একটি প্রতিনিধিদল আগে কখনও দেখিনি। আমরা এখানে নতুন সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। চীনা ব্যবসায়ী মধ্যে একধরনের নতুন মাত্রার আগ্রহ লক্ষ্য করছি, যার ফলস্বরূপ এই বিশাল দলকে আমাদের মধ্যে পেয়েছি।”

রোববার ঢাকার আগারগাঁওয়ে বিডা কার্যালয়ে ‘চীন-বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও বাণিজ্য সম্মেলন’ শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

উল্লেখ্য, শনিবার চীনের বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও একটি বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রতিনিধিদল নিয়ে তিন দিনের সফরে ঢাকায় আসেন।

বিডা চেয়ারম্যান জানান, “চীনা ব্যবসায়ীদের আজ সম্মেলনে চীনের ১৪৩টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী অংশ নিয়েছেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশেরও অনেক ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী উপস্থিত ছিলেন। মোট প্রায় ৫০০ জন অতিথি এই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন।”

তিনি আরও বলেন, “যেসব চীনা কোম্পানি অংশ নিয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকেই বিভিন্ন খাতে শীর্ষস্থানীয়। আজ বেশ কয়েকটি দ্বিপক্ষীয় বৈঠক (B2B ও B2G) হয়েছে।”

সম্মেলনে সারাদিন চীনা ব্যবসায়ী এর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ১৫০টিরও বেশি বৈঠক হয়েছে বলে জানান তিনি। “আমরা চেষ্টা করেছি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চীনা বিনিয়োগকারীদের যৌথ উদ্যোগ বা অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে সহায়তা করতে। আজ এ ধরনের ১৫০টির বেশি বৈঠক হয়েছে।”

এছাড়া, চীনের সঙ্গে একটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে বলে জানান বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, “আমরা ‘পাওয়ার চায়না’-এর সাথে অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের একটি দ্বিপক্ষীয় সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি। চাঁদপুরে একটি কৃষিভিত্তিক প্রকল্পের জন্য এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ নিয়ে কাজ চলছিল, কিন্তু সরকারে আসার পর আমরা দেখলাম প্রকল্পটি স্থবির হয়ে আছে। কিছু সিদ্ধান্তগত জটিলতার কারণে এটি এগোচ্ছিল না।”

চৌধুরী আশিক বলেন, “চীনা ব্যবসায়ীরা এখন তারা সেখানে গিয়ে প্রকল্পটি পরীক্ষামূলকভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। আশা করি, এতে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে, বিশেষ করে নারীদের। ধীরে ধীরে কর্মসংস্থানের সুযোগ আরও বাড়বে। সামগ্রিকভাবে, আমরা মনে করি এই সফর আমাদের জন্য একটি মাইলফলক ও ঐতিহাসিক অর্জন।”

তবে বিনিয়োগ একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া—এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি কাউকে এ প্রত্যাশা করি না যে তারা আজই বিনিয়োগের অঙ্গীকার করবেন। আমরা বারবার বলেছি, বিনিয়োগের প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। প্রথম ধাপ হলো তাদের বাংলাদেশে আনা, এখানকার পরিবেশ, ব্যবসায়ী, ব্যাংক, আইনি প্রতিষ্ঠান, কর নীতিনির্ধারকদের সাথে পরিচয় করানো এবং কারখানা পরিদর্শন করা—যা তারা আগামীকাল করবেন।”

বিডা চেয়ারম্যান আগামী ছয় মাস থেকে দুই বছরের মধ্যে বাস্তব বিনিয়োগের আশা প্রকাশ করে বলেন, “যেসব চীনা ব্যবসায়ী ইতিমধ্যে বাংলাদেশে সফলভাবে কাজ করছেন, তাদের সাথে নতুন বিনিয়োগকারীদের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কারণ, তারাই বাংলাদেশে বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দিতে পারেন। আমরা আশাবাদী, এই সম্মেলনে গঠিত সম্পর্কের ভিত্তিতে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ আসবে।”

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, “আমরা ইতোমধ্যে একটি চীনা ব্যবসায়ী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছি, যা তাদের বিনিয়োগের পথ সুগম করবে।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button