অপারেশন সিঁদুর: জইশ প্রধান মাসুদ আজহারের ১০ স্বজন নিহত

ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জবাবে ভারত যে অভিযান শুরু করেছে (Operation Sindoor), তাতে জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের ১০ জন আত্মীয় এবং ৪ সহযোগী নিহত হয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই ঘটনাটি পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের বাহাওয়ালপুরে ‘সুবহান আল্লাহ’ মসজিদে ঘটেছে।
জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত সন্ত্রাসী সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে মাসুদ আজহারের বড় বোন ও তার স্বামী, ভাগ্নে ও স্ত্রী, এক ভাতিজি এবং পরিবারের পাঁচ শিশু রয়েছে। এছাড়াও, আজহারের তিন ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং তাদের একজনের মা এই হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন।
মাসুদ আজহারের সন্ত্রাসী ইতিহাস
১৯৯৪ সালে ভারতে গ্রেপ্তার হওয়া মাসুদ আজহার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। ১৯৯৯ সালে একটি ভারতীয় বেসামরিক বিমান ছিনতাই করে তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানে নেওয়া হয়েছিল, যার বিনিময়ে ভারত আজহারসহ তিনজনকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, ৫৬ বছর বয়সী আজহার ভারতের একাধিক বড় সন্ত্রাসী হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে ২০০১ সালের সংসদ হামলা, ২০০৮ সালের মুম্বাই হামলা এবং ২০১৬ সালের পাঠানকট হামলা।
কাশ্মীরে উত্তেজনা ও ভারত-পাকিস্তানের সামরিক সংঘাত
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে জইশ-ই-মুহাম্মদ ভারত-শাসিত কাশ্মীরে একটি আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলা চালিয়ে ৪০ জন আধাসামরিক বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করে, যা দুই দেশের মধ্যে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি করেছিল।
সম্প্রতি, ২২ এপ্রিল পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত পাকিস্তানে পাল্টা হামলা চালায়। পাকিস্তানও সামরিক জবাব দিয়েছে, যাতে উভয় দেশে প্রাণহানি ঘটেছে। ভারত দাবি করেছে যে তারা ২৪টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ৭০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে।
যদিও মাসুদ আজহার পাকিস্তানে অবস্থান করছেন বলে ধারণা করা হয়, ইসলামাবাদ তার অবস্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে অস্বীকার করে আসছে।
এই সংঘাতের ফলে দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে, এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে তা নিবিড় পর্যবেক্ষণের দাবি রাখে।